মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব(দ্বিতীয় পর্ব)


শূন্যতত্ত্বের দ্বিতীয় কিস্তি:


এবার একটা উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাপারটা দেখা যাক ধরা যাক দ্বিতীয়টা অর্থা দ্বিতীয় চিন্তাটা হল জল এবার আমরা ধীরে ধীরে বিশ্লেষণের মাধ্যমে জলের অন্তর্নিহিত রূপে অর্থা প্রথম বা আদি চিন্তায় ফিরে যাব

আসলে আমরা যে জল খায় তা তো আসলে জল নয় জলের কোটি কোটি কণা,এবার আরেকটু ভিতরে প্রবেশ করা যাক-জলের প্রতিটি কণাতে একটি অক্সিজেন, দুটি হাইড্রোজেন অনুআরও ভিতরে গেলে পাবো ইলেকট্রন-প্রোটন-নিউট্রন অর্থা আমরা জল বলে যেটা গিলছি তা আসলে কোটি কোটি অক্সিজেন হাইড্রোজেন অনু বা ইলেকট্রন-প্রোটন-নিউট্রনের সমন্বয়

তাহলে যা দাঁড়ালো তা কিন্তু ভয়ানক এক সত্যের অনুসন্ধানআর এই অনুসন্ধান করায় শূন্যতত্ত্বের কাজ


আরেকটা উদাহরণের সাথে ব্যাপারটা দেখা যাক ধরা যাক রাম, এই রাম কে ইনি কি মহাভারতের রাম তাহলে তিনি একজন ভবঘুরে সংস্কৃতে রাম শব্দের অর্থ এমনই আরও গভীর থেকে গভীরে যাওয়া যেতেই পারে কিন্তু এইখানে তা নিষ্প্রয়োজন

আমরা এখানে রামকে আমাদের পাড়ার মোড়ে মোড়ে গলির ভাজে ভাজে যাকে পায় এই হল সেই রাম

এই রাম একদিন একটা বৃত্তাকারে মাঠে দৌড়াতে শুরু করলো প্রায় দশ থেকে পনেরো বার দৌড়ানোর পর দর্ দর্ করে ঘাম ছাড়তে ছাড়তে দাঁড়ালো যেখান থেকে শুরু করেছিল সেখানেই বিজ্ঞান এই বিষয়ে কী বলেযদি সরণ শূন্য হয় তবে কাজও শূন্য হয়

এবার আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের রোজানামাচা মিলিয়ে দেখি কি সব শূন্য হয়ে যাচ্ছে তো? তবুও কিন্তু তার প্রকাশ মিলিয়ে যাচ্ছে না

এবার শূন্যের আরেকটা ভয়ঙ্কর দিক দেখি আমরা যদি ভুল যায় শূন্য দিয়ে কোনো কিছু ভাগ করা যায় না অর্থা শূন্য দিয়ে ভাগ করি তাহলে কী হয় দেখা যাক


মনে করি,
           x=y
    ∴xz=yz【উভয় পক্ষকে z দিয়ে গুন করে】

বা,xz+xy-y²=yz+xy-y²【উভয় পক্ষকে(xy-y²) যোগ করে】

বা,xy-y²=yz-xz+xy-y【xy কে বাম পক্ষ থকে ডানপক্ষে এনে】

বা,y(x-y)=z(y-x)+y(x-y)

বা,y(x-y)=(x-y) (y-z)………(1)

বা,y=y-z【(1) এর উভয় পক্ষকে (x-y) দিয়ে ভাগ করে】………(2)

এখন (2) এ, 
            y=3, z=-1বসিয়ে পাই 3=4

আবার (2) এ,
          y=11, z=4 বসিয়ে পাই 11=7

এবার আমরা দেখতে পারছি একমাত্র শূন্যই কিভাবে তিন ইকুয়্যাল টু চার বা সাত ইকুয়্যাল টু এগারো করে তুলছে এক বিশেষ শর্তে কবিতার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় না

কেমন হবে তাহলে শূন্যতত্ত্বের কবিতা!


)       রেসিপি অফ পোয়েট্রী
                  
মহাদেবাশা


তালপাতা ঘুম
                              
এলোমেলো চুল

বারান্দা আলো   
                           
বরবটি কালো
       
    
এত       কিছু       গাছ
                
সারি
                         
সারি
                                    
চাঁদ


মাফলার ধূম      ধূপকাঠি খুন

       
গরদের   চাদর
           
সবে
                   
মাত্র
                          
ভরা
                                 
ভাদর

রঙ  লাগে জলে
                           
বরফের কোলে

ঠান্ডা হল  ছাতি
                         
রিক্সার মরফানি

           
আর
                      
বিটেক্সের চুলকানি

রেসিপি অফ পোয়েট্রী-
একটা গাছ লাগান তাঁকে তিন দিয়ে ভাগ করুন
ভুলেও এসময় পান খাবেন না তাহলে রেডিমেট কুত্তারা সুপুরি ভেবে দই চেটে দিতে পারে
ওঁ কবিতায় নমঃ

জলীয়গ্রাফার
           
কৃষ্ণ দাস

বিনুনি বাঁধা জলীয়গ্রাফার

টংলাইন        খোলামকুচি
ছায়া-স্ট্রোক

কামড়াঙা         এসকেপ

পুটসুখ ফাতায়
পেপেটিন < পাউডার > কিউসেক

চিকন তর-তর

কোপক-পাত
জরতার ছাত
৭্যেঁ৩ে    ৭া৩


)                  ""-
                
রিম্পা নাথ

কাকের টোস্ট              প্লাস্টিক বেডকভার
                          ×
ধূলোর খাতা                 চুমুর বাল্ব
___________________________________
চোখের আচার      -        বাদের ঘাম            

উদাহরণ তিনটি তিন ধরনের বিষয়হীন অর্থা শূন্যের চিন্তাকে ধরে রেখে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকের ঝলক রেসিপি অফ পোয়েট্রি কবিতাটি শুরু থেকে শেষের আগে  পর্যন্ত এগিয়েছে কখনও অলটারনেটিভ ক্রমে অথবা সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে
আর শেষটা Run on কম্পোজ

জলীয় গ্রাফার কবিতাটিও নির্দিষ্ট আঙ্গিক মেনে চলেনি সে গড়ে উঠেছে নিজস্ব স্বকীয়তায় ভাঙা গড়ার খেলাটা কবিতাটি দেখলেই বোঝা যায়

"
"- এই কবিটির অ্যাপ্রোচ অনেকটা গাণিতিকের মতো কিন্তু গাণিতিক নয়

মহাদেবাশা তার কবিতায় যে ইনফরমেশন দিচ্ছে তা কিন্তু একটা ফ্যান্টাসির শূন্যতা তা করতে গিয়ে সে তৈরি করছে নিজস্ব একটা জগ পুরো কবিতাটায় ভেঙে ভেঙে তৈরি করছে শব্দের মোহজাল শ্রাব্যকল্পের বারান্দা মুছে যাচ্ছে চিত্রকল্প চলচিত্রকল্প শেষে গিয়ে আমরা পেয়ে যাচ্ছি এই কবিতা লেখার রেসিপি

জলীয় গ্রাফার কবিতায় কৃষ্ণ তুলে ধরেছে বিনুনি বাঁধা জলীয় গ্রাফারকে এক মহাজাগতিকশূন্যের পরিধি যেখানে অনায়াসে ছায়ার স্ট্রোক হয়ে যায় কামরাঙার উপর জোড় দিতে গিয়ে কবি বানানকে বুড়ো আঙুল দেখাতে


দেখাতে চলে যাচ্ছে কিউসেক চিন্তার শূন্যে

"
"- কবিতাটির নামকরণেই রিম্পা ভেঙে ফেলতে চাইছে সমস্ত কলেবর কিন্তু শূন্যের আভিজাত্যকে বজায় রেখে তার কবিতাটি অনেকটা গাণিতিক অ্যাপ্রোচের মতো অথচ তা কিন্তু নয় কাকের টোস্ট খেতে খেতে চুমুর বাল্ব চোখের আচার বাদের ঘুম কিভাবে যে সব গুণ বিয়োগ করে একাকার হয়ে যাচ্ছে খুলে যাচ্ছে আরেকটা নতুন কবিতা লেখার পথ


মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব(দ্বিতীয় পর্ব) মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব(দ্বিতীয় পর্ব) Reviewed by Unknown on October 30, 2017 Rating: 5

1 comment

  1. মন ভরলোনা এবং মাথাও। কবিতার অংশটুকু ঠিকই আছে। কিন্তু শূন্য তত্ত্বের পথে যুক্তিগুলো খুব দুর্বল লেগেছে। এরথেকে অনেক শক্তিশালী যুক্তি তুমি খুঁজে পাবে আমাদের চারপাশে, ভারতীয় সাহিত্যে, খুঁজে নাও। গাণিতিক যুক্তিটার কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনি। ওটাকে ঠিক গণিত বলতে পারছি না। কল্পবিজ্ঞানের মতো কল্পগণিত বলা যেতে পারে। গাণিতিক যুক্তির অংশে দুজায়গার ভুল (printing mistake), ঠিক করে নিও।

    বিরুদ্ধতা নয়, সমালোচনা হিসাবে নিও। পরবর্তী কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম। আমি চাই তুমি সফল হও। শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete