শূন্যতত্ত্বের তৃতীয় কিস্তি:


শূন্যতত্ত্বের তৃতীয় কিস্তি:


এখন আমরা এর সত্যতা সর্বদাই সব জায়গায় উপলব্ধি করতে পারবো মানুষ আজীবন এমন এক তত্ত্বের খোঁজ করেছে যা তাকে উন্নতির চরম শিখায় পৌঁছে দিতে পারে অথচ মানুষ যে সমস্ত তত্ত্বকে আঁকড়ে ধরেছে তাই তাকে বিফলতার সম্মুখীন করেছে আবার মানুষ নতুন আশায় বুক চিতিয়ে আঁকড়ে ধরেছে অন্য তত্ত্ব কিন্তু আবার সেই বিফলতায় তার সঙ্গী কেন না সে প্রকৃত সত্যকে ছেড়ে কম সত্যের প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়েছে

শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ঔপনিবেশিক অরাজকতা অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না আর এর হাত ধরেই এসেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের হুঙ্কারের ক্যাকোফনি আর এর ঠিক পঁচিশ বছর পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিউক্লিয় আস্ফলন কিন্তু মানুষ এসব কে বুড়ো আঙুল দেখাতে খুব একটা দেরি করেনি

আইনস্টাইন কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হাতিয়ার হিসাবে বোমা তৈরি করেছিলেন!

এর উত্তর নিশ্চয় আমাদের সকলের জানাযদি আমরা সঠিক প্রশ্ন করতে জানি তাহলে তার উত্তর জানার প্রয়োজন হয় না , বিপরীত দিকটাও ভয়াবহ ভাবে সত্য অর্থা উত্তর জানলে প্রশ্ন করার প্রয়োজন পরে না

এখানেই চলে আসে দ্বন্দ্বতত্ত্বের কথা যা কবি এবং কবিতাকে দাঁড় করিয়ে দেয় এমন এক আয়নার সামনে যেখানে সমস্ত Water logic  প্লাজমা হয়ে যায় কবি তখন লড়াই করে তার নিজের সাথে সে পেয়ে যায় তার নতুন পথের দিশা

সে যাইহোক পশ্চিমী জগ দুটি বিশ্বযুদ্ধ দুটি প্রধান বিপ্লব, রুশ চীনের, অভিঘাতে টলমল করে উঠেছিল পৃথিবী ছিল এক অস্থির, এমন কি ভয়াবহতাহলেও আমরা যে আমাদের কিছু কিছু সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছিলাম তার নানান লক্ষণ জড়ো হতে শুরু হয়েছিল কী কী সেই লক্ষণ তা নিয়ে আমাদের বিশেষ আলোকপাত করার কোনো প্রয়োজন নেই কিন্তু কেন সেই লক্ষণ জড়ো হতে শুরু করেছিল তা নিয়ে মাথাব্যথা আছে শুধু তাই নয় মাথা ব্যথার যথেষ্ট স্যারেডনও আছে

এরপর শুরু হয়েছে ঠান্ডা লড়াই দ্বিগুন তীব্রতা নিয়ে তার সঙ্গে এসেছে নিউক্লীয় বিলুপ্তির আশঙ্কা শিল্পনির্ভর দেশগুলোকে তছনছ করে সমস্ত পশ্চিমী সমাজ জুড়ে বেকারির ক্যান্সার ছড়িয়ে দিয়ে বিলম্বিত আর্থনীতিকে সঙ্কট দ্বিগুন প্রতিশোধস্পৃহা নিয়ে জাঁকিয়ে বসেছে হিংসা সন্ত্রাসবাদের বৈরিতা থেকে প্রায় কোনো দেশই মুক্ত নয় ক্ষমতার এক তাপর্যপূর্ণ মোড় নিয়ে এসেছে পৃথিবীর ঘটনাপ্রবাহে তৃতীয় বিশ্ব পরিণত হয়েছে নিষ্ক্রিয় থেকে এক ইতিবাচক উদ্বেগজনক চাঞ্চল্যসৃষ্টিকারী লেখক সাংবাদিকদের খেটেখুটে তৈরি করা প্রচার মাধ্যম দিয়ে প্রসারিত আসন্ন বিপর্যয়ের ছবি প্রাত্যহিক কথাবার্তায় ব্যবহৃত শব্দভান্ডারের মধ্য ঢুকে গেছে

ভবিষ্যসম্পর্কে নৈরাশ্যের এই লক্ষণনির্ণয় অকাট্য তথ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে মনে হলেও তা একটা বিমূর্ত তাত্ত্বিক কাঠামো জনগনের বৃহত্তম অংশের তাতে কোনো বিশ্বাস নেই এবং তাদের আচরণেই তা প্রমাণিত লোকে প্রচুর নিষ্ঠা সহকারে প্রেম করে, গর্ভধারণ করে, সন্তানদের জন্মদেয় মানুষ করে, ব্যক্তিগত সামাজিজভাবে স্বাস্থ্য শিক্ষার ওপর প্রচন্ড মনযোগ দেওয়া হয় যাতে পরবর্তী প্রজন্মের সুখস্বাচ্ছন্দ্য বাড়ে সবসময় খোঁজা হয় নতুন নতুন শক্তির

কিন্তু ভারত এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সে তার ঐতিহ্য বজায় রেখে যুগ যুগ ধরে নিজেকে আপডেট করেছে সেই ঐতিহ্য হল শূন্যের ঐতিহ্য ভারতবর্ষের একমাত্র যুগ জিরো ওয়াটের যুগ সেই আদ্যিকাল থেকে প্রবাহমান কাল পর্যন্ত বাংলা কবিতার আদিরূপও তাই অর্থা চর্যাপদের কথা বলছি কিন্তু শূন্যবাদ ভাবগত ভাবেই আটকে থেকে গেছে এখন সময় এসেছে শূন্যতত্ত্বকে সব দিক থেকে শূন্য করে তোলার, কবিতায় এবং জীবন যাত্রায়

এখন তো আমাদের চলনে-বলনে প্রতি মুহুর্তে শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, -ব্যাঙ্কি, -টিকিটিং,-মার্কেটিং যাবতীয় লুব্রিকান্ট, ফ্লিপকাট থেকে শুরু করে কাতারে কাতারে অনলাইন বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি একটি ক্লিকেই দেশ বিদেশের গোলক ধাঁধায় এক সময় ভাবা হত বিটই কম্পিউটারের সঞ্চয়ের শেষ ইউনিট কিন্তু এখন আমরা জেনে গেছি Qubit এর কথাফেসবুক-টুইটার-হোয়াটস অ্যাপ এর ছড়াছড়ি


স্যার স্টিফেন ডব্লু হকিং দেখিয়েছেন: যেহেতু মহাবিশ্বের পরা এবং অপরা শক্তি প্রায় সমান সমান সুতরাং যোগ-বিয়োগ করলে দেখা যাবে যোগফল শূন্য ব্যাপারটা প্রায় মায়াবাদ কিংবা শূন্যবাদের পর্যায়ে এসে পড়ে

একসঙ্গে চলতে থাকে ক্রমসংকোচনবাদ আর ক্রমবিকাশবাদের সংশ্লেষ বিশ্লেষণ এভাবেই এগিয়ে যায় সমাজ যতক্ষণ না সে আংশিক সত্য থেকে পূর্ণ সত্যের দিকে পৌঁছায় বিজ্ঞানও এখন সেই পূর্ণ সত্যের অমোঘ বাণী শোনাচ্ছে

তাহলে কবিতা কেন দূরে সরে থাকবে, কেন তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলা হবে নিয়মের বেড়াজালে শূন্যতত্ত্ব বা জিরো ওয়াট এমন একটা তত্ত্ব যে আপনাকে ডাক দিচ্ছে নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে অনিয়মের মুক্তাকাশে

          |
          |
          |
          |
          |
          |
          |                 

      (-) -------------------------------- (+)
ক্রমসংকোচন         |               ক্রমবিকাশবাদ
         
                  
শূন্যতত্ত্ব


জিরোওয়াটের যুগ(ভারতীয় বা প্রাচ্য)
                                 |
              |--------------------------------|
        
বিনিশ্চয়-নির্মাণ-বিনির্মাণ-বিনিশ্চয়
                       |                     |
          
আধুনিক যুগ      উত্তরআধুনিক যুগ
                    |_________________|
                                  |
                   ( 
ইউরোপীয় বা পাশ্চাত্য)


দ্বিতীয় কিস্তি 
শূন্যতত্ত্বের তৃতীয় কিস্তি: শূন্যতত্ত্বের তৃতীয় কিস্তি: Reviewed by Unknown on November 07, 2017 Rating: 5

1 comment

  1. বেশ সচ্ছন্দ কলম ����

    ReplyDelete