মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব (পঞ্চম পর্ব )



শূন্যতত্ত্বের পঞ্চম কিস্তি:



শিল্প বিপ্লবের পর যদি আধুনিকতার সূত্রপাত হয় এবং উচ্চপ্রযুক্তিবিপ্লবের (কম্পিউটার) পর পোস্টমর্ডান যুগের শুরু হয় তবে কী 'ই(e)' বিপ্লবের পরেই জিরোইজম আমাদের কাছে ভয়াভয় ভাবে প্রকটতা লাভ করেছে।

শিল্পবিপ্লবের পর যে আধুনিক যুগের সৃষ্টি এটা তার বিকাশবাদ কিন্তু এর ভিতরেই লুকিয়েছিল
বিভিন্ন আন্দোলনের ক্রমসংকোচনবাদ।তাই আজকে e-বিপ্লবের পর কোন বিপ্লব হবে বা তার মধ্যে কোন ক্রমসংকোচনবাদ লুকিয়ে রয়েছে তা যুক্তিগত ভাবে বলতে পারবে বিজ্ঞানীরা কবিরা এগিয়ে যাবে আপনতালে আপন সৃষ্টির মোহে।

সবাই যে সে কবিতা লিখবে এমন দাবি করা যেমন মূর্খামি তেমনই সবাই যে বুঝবে তাও না।
কবি এগিয়ে যাবে তার নিজের ছন্দে নিজের আনন্দে।আধুনিকযুগ যদি হয় thesis তবে উত্তর আধুনিকযুগ হল antithesis আর শূন্যতত্ত্বের যুগ বা জিরোইজম হল synthesis।

শূন্য এবং শূন্যের ধর্ম সম্বন্ধে আলোচনা আজ সবাইকে তার অনন্যতায় মুগ্ধ করে। অধুনা অনেক বিষয়ে শূন্য সম্বলিত ধারনা যেমন শূন্য সেট, শূন্য অপেক্ষক, শূন্য-বৃদ্ধি(জনসংখ্যার স্থিতি বোঝাতে), শূন্য ভেক্টর, শূন্য দেশ প্রভৃতির পরিকল্পনার ভিত্তিমূল হচ্ছে শূন্য। তাহলে শূন্য কবিতা কেন নয়!

আজকে আমরা চারটে কবিতার মধ্যে দিয়ে দেখে নেব শূন্যতত্ত্ব কীভাবে তার উত্তরণের পথে এসেছে।



১. একদিন সবাই নদী হবে
    তালা আর চাবি বদলে নেবে
    পাসওয়ার্ড

    দরজার ওপর প্রান্তে
    আলপনার ছাপ

•প্রথম আমরা যে কবিতা দেখতে পাচ্ছি তা কিন্তু বোধমূলক কবিতা। সমগ্র কবিতাটি জুড়ে বোধের আস্ফালন। এখন সর্বত্র এই ধরনের কবিতা লেখা হচ্ছে। বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নীরিক্ষাও চলছে এর উপর। এই ধরনের কবিতায় দৃশ্যকল্পকে ছাড়িয়ে বোধকল্প সর্বস্ব হয়ে উঠে।


#  দরজার শেকলের কাছে জমা থাক নম্র
    আবেদন
    ঘাসশিশিরের গল্প থেকে তুলে নিচ্ছি হেলমেট
    সংক্রান্ত চুরমুর রঙ এখন কেউ আর
    পাসওয়ার্ডের কথা বলছে না সবাই ঘুমের
    ভিতর খুঁজে নেয় পরবর্তী জানালার তালা
    চাবির ক্যালেন্ডার


    দূরে কোথাও হুইশেলের ফুচকা বাজে ঘন
    কালো তেলের মাঝে ভেসে উঠে আয়না
    হওয়ার বাসনা



•এই কবিতাটি পোস্টমর্ডান বা উত্তর আধুনিক      কবিতা। যেখানে আমরা পেয়ে যাচ্ছি নতুন তথ্য আর চলচিত্রকল্প। বহুরৈখিক চলচিত্রকল্প।

#
     ঘুম পাড়ানি ঘামের ভিতর
     টেবিল বাজানো হাত

     ফসকে গেলেই  ছলকে উঠে
     মায়ায় কাটানো রাত

     তোমার সাথে চুমুর খেলা
     রক্তে মেটানো দাম

    পকেট ভর্তি ঢেউয়ের কাছে
    গল্প ভেজানো  চাঁদ


•আধুনিক যুগের কবিতা যেখানে দৃশ্যকল্প বা চিত্রকল্পের প্রাধান্য পায় বা পেয়ে থাকে। এই কবিতাটিও তার ব্যতিক্রম নয়। যেখানে আবেগের আস্ফালন চোখে পড়ার মতো।


# বারুদ ঠাঁঠা রোদ
                               গল্প ভেজানো ক্রোদ
                 তাপ্পি মারা গাছ
                        নদীর  কাছে জমা থাক
                                   আদরখাকী স্বাদ
 

কল্পতরু  মেঘের কাছে
                                 মেদ জমেছে ল্টো
                                                      উ করে


চাদরজুড়ে গুড্ডু আলো
                            বাসস্টপের মাথা খেল
জোড়ায় জোড়ায় স্বপ্ন উড়ে
                       ঘুণ পোকাদের আড্ডা জমে
               সিঁড়ির কাছে থমকে বাবা
                    চমকে যাচ্ছে অমাবস্যা



• এটি হচ্ছে শূন্যতত্ত্বের কবিতা। যেখানে শ্রাব্যকল্প প্রাধান্য পায়। গড়ে ওঠে ফ্যান্টাসির এক অন্য জগ
। water লজিক নয় প্লাজমা লজিকই এখানে প্রাধান্য পায়। এই কবিতা একটা ইন্দ্রিয় বন্ধ করে পড়তে হবে। তার অর্থ হল চোখ বন্ধ করে কবিতাটি শুনুন আর ভেসে উঠুন শ্রাব্যতার মায়াকল্পে। শ্রাব্যতার অনুকল্পিক ফাটলই আপনাকে নিয়ে যাবে মায়াহীন ফ্যান্টাসির লৌকিক ভূমিতে।

#(একই চিন্তার চারটে ধরন)
                           -মহাদেবাশা

মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব (পঞ্চম পর্ব ) মহাদেবাশার শূন্যতত্ত্ব (পঞ্চম পর্ব ) Reviewed by Unknown on November 23, 2017 Rating: 5

No comments